মোহসীন-উল হাকিম।।
হিরণ মাঝির নেতৃত্বে ১৩ জেলে সাগরে গেছেন ইলিশ ধরতে। গত ১৮ আগস্ট ঝড়ে ডুবে যায় ট্রলার। জালের ফ্লোট বেঁধে হাতে হাত ধরে ভেসে পড়েন তাঁরা। ট্রলারটি যখন ডোবার সময় দুইজন ডেক এর ভিতরে আটকা পড়েন। বাঁকী ১১ জন ভাসতে থাকেন উত্তাল সাগরে।
খাবার নাই, মিঠা পানি নাই। ডাঙ্গার কোনো নিশানা নাই। জোয়ার হিসাব করে উত্তরের পথ ধরে হিরণ মাঝির জেলেরা। একদিন, দুই দিন, তিন দিন। ২১ আগস্ট সুন্দরবনের কালির চরে এসে দেখেন দুইজন হারিয়ে গেছে। বেঁচে থাকলো ১১ জন। কী করবে? কোথায় যাবে? সুন্দরবন তো তাদের অচেনা!
দূরে একটা টাওয়ার দেখা যায়। মরা গেওয়া গাছের ভেলা বানিয়ে আবারও জোয়ার দেন তাঁরা। কাছাকাছি একটি খালে গিয়ে আবারও পথ হারিয়ে ফেলেন। চার দিন খাওয়া নাই। শরীরে শক্তি নাই।
২৩ তারিখ সকাল ১১টা। সুন্দরবনের কাগা দোবেকীর বনকর্মীরা টহলে বের হন। খাইরুল খাই, ফারুক ভাইরা দূর থেকে কয়েকজন মানুষকে চরে পড়ে থাকতে দেখেন। কাছে গিয়ে দেখেন সকলেই বেঁচে আছেন। কিন্তু মৃতপ্রায়। পাশেই কোস্টগার্ড এর স্টেশন। এরপর সকলে মিলে উদ্ধার করেন পটুয়াখালীর সেই ডুবে যাওয়া ট্রলারের বেঁচে যাওয়া ১১ জেলেকে।
কী জীবন এই মানুষগুলোর! সাগর থেকে জীবন বাজি রেখে এরা মাছ ধরে। বাঁচে না হলে মরে। আমরা তাদের খোঁজ রাখি না। জীবনের চেয়ে বোধ হয় মাছের দাম বেশি?
ধন্যবাদ বন বিভাগ ও কোস্টগার্ডকে। এখনও অনেক জেলে নিখোঁজ, অনেক ট্রলার নষ্ট। আপনারা আরেকটু উদ্যোগী হলে তাদের কষ্ট কমতো।